চট্টগ্রাম সিটিতে কোটি টাকা আত্মসাৎ: কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

সাড়ে তিন কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) হিসাব বিভাগের তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। সোমবার (৬ অক্টোবর) স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সিটি কর্পোরেশন–২ শাখা থেকে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, জাইকার আওতায় সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের সিরাজউদ্দৌলা রোড শাখায় পরিচালিত হিসাব (নম্বর–০১০১৮৩৬০০০১০৩) থেকে মেয়রের অনুকূলে ইস্যুকৃত চেকটি ভাউচার পরিবর্তন করে অন্যভাবে ব্যবহার করা হয়। এতে মোট ৩ কোটি ৪৫ লাখ ৩ হাজার ৫২৭ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।

এই ঘটনায় অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেডের আগ্রাবাদ কর্পোরেট শাখার তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলা দায়ের করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে। এছাড়া, দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে অগ্রণী ব্যাংকের আরও একজন কর্মকর্তা এবং চসিকের হিসাব বিভাগের তিন কর্মকর্তা/কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে দুদক।

দুদকের ২০২৪ সালের ১৩ জুনের পত্রের ভিত্তিতে নেওয়া এ সিদ্ধান্তে বলা হয়েছে, আত্মসাতের সময় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে চসিকের ভারপ্রাপ্ত প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির চৌধুরী, হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা (বিল) আশুতোষ দে এবং হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা (বাজেট) মাসুদুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তবে এর মধ্যেই গত ২৯ সেপ্টেম্বর চসিকের সংস্থাপন শাখা মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির চৌধুরীকে প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা পদে পদোন্নতি দেয়। কিন্তু মাত্র এক সপ্তাহের মাথায়, ৫ অক্টোবর মেয়রের অনুমোদনক্রমে সেই পদোন্নতি আদেশ বাতিল করা হয়। নতুন অফিস আদেশে উল্লেখ করা হয়, পদোন্নতির শর্ত অনুযায়ী কোনো বিরূপ তথ্য পাওয়া গেলে কর্তৃপক্ষ পদোন্নতি বাতিল করতে পারবে—সে অনুযায়ী আদেশটি বাতিল করা হয়েছে।

এরপরদিনই স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মো. ফিরোজ মাহমুদের স্বাক্ষরিত চিঠিতে নির্দেশ দেওয়া হয়, সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিষয়টি দুর্নীতি দমন কমিশন ও স্থানীয় সরকার বিভাগকে জানাতে হবে।

এই নির্দেশের মাধ্যমে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হলো।