সীতাকুণ্ডে ভেসে এলো বিপন্ন ইরাবতী ডলফিন; মৃত্যুর রহস্য জানার জন্য ময়নাতদন্ত শুরু
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার গুলিয়াখালী সমুদ্রসৈকতে বিপন্ন প্রজাতির একটি মৃত ডলফিন ভেসে এসেছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বুধবার সকালে সৈকতে ডলফিনটি পড়ে থাকতে দেখেন। জানা যায়, ডলফিনটি মঙ্গলবার রাতের জোয়ারের পানিতে সৈকতে আসে।
সৈকতের সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন জানিয়েছেন, মৃত ডলফিনটিতে পচন শুরু হয়ে গেছে। ফলে তা দ্রুত সরানো না হলে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে সৈকতে মানুষের চলাচলে অসুবিধা হবে। বন বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, ডলফিন ভেসে আসার খবর পাওয়ার দেরিতে তাদেরকে তা এখনো সরাতে সমস্যা হচ্ছে।
স্থানীয়দের চোখে দেখা, ভেসে আসা ডলফিনটি লম্বায় প্রায় ছয় ফুট এবং এর পাখনা ছোট ও বৃত্তাকার। বিভিন্ন ওয়েবসাইট অনুসারে, ডলফিনটির গঠন বিপন্ন প্রজাতির ইরাবতী ডলফিনের সাথে মিল রয়েছে। তবে কোনো প্রাণিবিশেষজ্ঞ তা নিশ্চিত করেননি। এই ধরনের ডলফিন সাধারণত উপকূলীয় নদী, মোহনা ও অল্প গভীর সমুদ্রে বসবাস করে।
উপকূলীয় বন বিভাগের সীতাকুণ্ড রেঞ্জ কর্মকর্তা রনি আলি জানান, বন বিভাগের কর্মীরা ডলফিনটি উদ্ধারে ঘটনাস্থলে গেছেন। তবে প্রাথমিকভাবে এটি কোন প্রজাতির তা নিশ্চিত করা যায়নি।
স্থানীয় নৌকা চালান মো. মুন্না বলেন, ডলফিনটি রাতের জোয়ারের পানিতে ভেসে এসে সৈকতের দোকানের কাছে আটকা পড়েছিল। পরে দোকানদার সেটি টেনে বাইরে সরিয়ে দেন।
সৈকত ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফখরুল ইসলাম জানান, বিষয়টি জানার পর দ্রুত বন বিভাগকে ডলফিনটি সরানোর জন্য জানানো হবে।
বন বিভাগ জানিয়েছে, ভেসে আসা ডলফিনটি বিপন্ন প্রজাতির ইরাবতী ডলফিন। এর মাথা গোল, ঠোঁট নেই, লম্বায় প্রায় ছয় ফুট এবং পাখনা ছোট ও বৃত্তাকার। এই প্রজাতির ডলফিন দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার উপকূলীয় ও মোহনা অঞ্চলে ও অল্প গভীর সমুদ্রে বাস করে।
রনি আলি আরও জানান, ডলফিনটি সন্ধ্যায় সৈকতে মাটি চাপা দেওয়া হয়েছে। মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করতে হাড় ও মাংসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা কল্লোল বড়ুয়া বলেন, ডলফিনটির মৃত্যু দুই কারণে হতে পারে—বয়সজনিত কারণে বা আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি বয়স্ক হলেও আঘাতপ্রাপ্তও হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।



